সততা ও স্বচ্ছতাই মূল চাওয়া

অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ট্রান্সকম লিমিটেড আজ এ জায়গায় এসেছে। ১৮৮৫ সালে জলপাইগুড়িতে চা–বাগানের মধ্য দিয়ে ট্রান্সকম ব্যবসা শুরু করে। দেশভাগ, পাকিস্তান রাষ্ট্রের উদ্ভব ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা—এ রকম বড় বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ট্রান্সকমকে ব্যবসা করতে হয়েছে। ১৯৫০ ও ৬০-এর দশকের কঠিন সময়ে ট্রান্সকম পাটের ব্যবসা শুরু করে। এতে বেশ দ্রুতই সফল হয় তারা। তবে স্বাধীনতার পর শিল্পের জাতীয়করণ হলে ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান ব্যাপক আর্থিক চাপে পড়ে যান। তিনি এ নিয়ে বলেন, ‘আগের সচ্ছল অবস্থা থেকে এ রকম কষ্টের মধ্যে পড়ে গিয়ে আমার বড় শিক্ষা হয়। টেকসই ব্যবস্থা এবং সব প্রচেষ্টার ওপর বিশ্বাস রাখার গুরুত্ব তখন বুঝতে পারলাম। আসলে আমি যা–ই করি না কেন, তাতে উৎকর্ষ অর্জনের পথ খুঁজতে হবে।’

লতিফুর রহমান ট্রান্সকমের সব কর্মীকে পেশাগত পরিবারের অংশ মনে করেন। নিজের মূল্যবোধের আলোকে তিনি দৈনন্দিন জীবনযাপন করেন। এতে কোম্পানির সংস্কৃতি ও রীতিনীতিতে তার প্রভাব পড়ে। তিনি বলেন, সততা ও স্বচ্ছতাই ট্রান্সকম লিমিটেডের মূল চাওয়া। তাঁর ভাষ্য, ‘আমি প্রতিভা বা মেধাভিত্তিক মূল্যায়নের পরিবেশ তৈরি করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি; তার সঙ্গে আছে শ্রদ্ধা ও ক্ষমতায়ন। ট্রান্সকমের প্রত্যেক কর্মী নিজের ভূমিকা ও অবদানের জন্য শ্রদ্ধার্হ।’এই পথচলায় লতিফুর রহমানের পরিবারের একাধিক প্রজন্মের সদস্যরা ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন। তবে পেশা নির্বাচনে পরিবারের সদস্যদের স্বাধীনতা আছে। তিনি বলেন, পরিবারের যে সদস্যরা ব্যবসায় যুক্ত হতে চান, তাঁদের ব্যবসায়িক মূল্যবোধ ও পরিচালনা পদ্ধতি শেখার জন্য কঠোর প্রশিক্ষণ নিতে হয়।

বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর মধ্যে ট্রান্সকমই সবচেয়ে বেশি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত। লতিফুর রহমান মনে করেন, এর ফলে প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভবিষ্যতে কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় পরিবারের সদস্যসংখ্যা কমবে। তাঁর বিশ্বাস, এতে সব অংশীজনই লাভবান হবেন।

Leave a Reply