এদেশে আর কোনো দিন সন্ত্রাসী দল আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে না।গণহত্যাকারী খুনি হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে এবং দলটিকে নিষিদ্ধ করতে হবে।আগে বিচার, তারপর সংস্কার, তারপর নির্বাচন।এর আগে কেউ নির্বাচন চাইলে আমরা রাজপথে নামব।
জুলাই আন্দোলনে গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে রোববার বিকালে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘জুলাইয়ের নারীরা’ ব্যানারে আয়োজিত নারী সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
এদিন দুপুর ২টা থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী নেত্রীসহ জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ও শহিদ পরিবারের সদস্যরা শাহবাগে উপস্থিত হন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী সদস্য ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নারায়ণগঞ্জ জোনের নেত্রী সিনথিয়া জাহান আয়েশা বলেন, অনেকে এখন নির্বাচন চাইছেন। আমরা বলতে চাই- আগে বিচার, তারপর সংস্কার, তারপর নির্বাচন। এর আগে কেউ যদি নির্বাচন করতে চায়, তাহলে আমরা রাজপথে নামব। আমাদের সাফ কথা, খুনি হাসিনাসহ আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিচার আগে। তারপর সংস্কার, তারপর নির্বাচন।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরউদ্দীন পাটোয়ারী, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখপাত্র সামান্থা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, সহ-মুখপাত্র সালেহ উদ্দিন সিফাত, তাজনূভা জাবিন, ডা. মাহমুদা মিতু, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুসরাত তাবসসুম প্রমুখ।
জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অপরাধ করেছেন, তার বিচারও আন্তর্জাতিক আদালতে হবে। ভারত বেশিদিন শেখ হাসিনাকে রাখতে পারবে না। আওয়ামী লীগ আর এদেশে রাজনীতি করতে পারবে না। হয় আমরা বাংলাদেশে থাকব, না হয় আওয়ামী লীগ থাকবে। মাঝামাঝি কোনো অবস্থান নেই।
জাতীয় নাগরিক কমিটির সহ-মুখপাত্র সালেহ উদ্দিন সিফাত বলেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির তাজনূভা জাবিন বলেন, জাতিসংঘের রিপোর্টে উঠে এসেছে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী দল। তাই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আওয়ামী লীগ এখন আর রাজনৈতিক দল নয়, তারা সন্ত্রাসী দল। বাংলাদেশে আর কোনো সন্ত্রাসী দল রাজনীতি করতে পারবে না। ভারতকে বলব, সন্ত্রাসীদের মদদ দেবেন না। খুনিদের ফিরিয়ে দিয়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নত করুন। প্রোপাগান্ডা ছড়াবেন না। এই মাটিতে আর আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে না।
জাতীয় নাগরিক কমিটির ডা. মাহমুদা মিতু বলেন, যারা জুলাই আন্দোলনে সম্মুখভাগে ছিল, তাদের অনেককেই আমরা এখন হারাতে বসেছি। আমাদের নারীদের পথচলা এতটা সহজ নয়। শুধু ধানের শীষে ভোট দেওয়ার কারণে ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে। আমরা আর কোনো খুনের রাজনীতি দেখতে চাই না। আমাদের চলার পথ সরকারকেই সহজ করতে হবে।
এ সময় জুলাই অভ্যুত্থানে শহিদদের পরিবারের সদস্যরাও তাদের স্বজন হারানোর বেদনা তুলে ধরেন। জুলাই আন্দোলনে শহিদ এক নারীর সন্তান হাফেজা বলেন, আমার মা মাছ বিক্রি করতো যাত্রাবাড়ী। আন্দোলনে আমার মা গুলি খেয়ে কাজলা পড়েছিল। আমার মা হাসপাতালে একটা আইসিইউ পায়নি। ভালো চিকিৎসা পায়নি। চিকিৎসকদের অবহেলায় আমার মা মারা গেছেন।
শহিদ ইয়াকুবের মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলে আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। আমি আর তাকে ফিরে পাব না। যারা আমার সন্তানকে খুন করেছে সেই খুনি হাসিনার বিচার আমি চাই।