উধাও হয়ে যাচ্ছে রেল লাইনের পাথর ॥ ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে রেল চলাচল॥ রেল কর্তৃপক্ষের নজর নেই

গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধা রেলওয়ে স্টেশনের উত্তরদিকে মেইন রেল লাইনের উভয় পাশে একদম লাইন ঘেঁষে অবৈধভাবে গড়ে উঠছে বসতি। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রেল লাইন ও চুরি যাচ্ছে রেলওয়ের পাথর। রেল লাইনের মাটি কেটে এসব বসতবাড়ি গড়ে তোলার ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে রেল চলাচল। অথচ রেল কর্তৃপক্ষের কোন নজর নেই।
অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের ভূ-সম্পদ বিভাগের ৩নং কাচারীর রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের যোগসাজসে এ সমস্ত অবৈধ বসতি গড়ে উঠছে। রেলওয়ের জায়গায় বেআইনীভাবে বসবাসকারিরা রীতিমত প্রতিমাসেই নিয়মিত মাসোহারা প্রদান করছে বলেও জানা গেছে।

সরেজমিনে ওইসব এলাকা পরিদর্শন করে দেখা যায়, উত্তরদিকে রেলওয়ের প্লাটফরমের প্রায় সাথেই পূর্ব পাশে লাইনের পাশ ঘেঁষেই অবৈধ দখলদাররা ১১টি বসতবাড়ি নির্মাণ করেছে। এ সমস্ত বসতবাড়িতে বসবাসকারি অনেকেই রীতিমত খড়ের পুঞ্জ দিয়ে একাধিক গরু এবং ছাগল প্রতিপালন করছে। এ সমস্ত গরু এবং ছাগল রেল লাইনের ধারেই বেঁধে রাখা হয়। যা ট্রেন চলাচলে ঝুঁকিপুর্ণ।

অন্যদিকে পশ্চিম পাশে একটি বিশাল গোডাউন গড়ে তোলা হয়েছে। যেখানে অবৈধভাবে মালামাল রাখা হচ্ছে। এছাড়া খড়ের পুঞ্জ, ধান শুকানো, ধান মাড়াই, খড় শুকানোর সমস্ত কাজ রেল লাইনের ধারে এবং প্লাটফরমেই সম্পন্ন করে এই অবৈধ বসবাসকারিরা। এতে প্লাটফরমে যাত্রীদের হেঁটে বেড়ানো বা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করাও অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বসতবাড়ি ঘেঁষে যাওয়া রেল লাইনগুলোর মূল্যবান পাথর চুরি করেও অন্যত্র বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে রেল লাইনগুলো পাথর শূন্য হয়ে পড়েছে। অথচ পাথর শূন্য রেল লাইন দিয়ে রেল চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হলেও রেল কর্তৃপক্ষের তা নজরেই পড়ছে না।

রেল লাইনের পাশ ঘেঁষে অধিকাংশ এলাকা জুড়ে গড়ে উঠেছে ইট ভেঙ্গে খোয়া বানানো, বালু এবং শুরকি কেনাবেচার রমরমা ব্যবসা। তদুপরি রেল লাইনের এই সমস্ত এলাকায় এবং আশেপাশের এলাকা জুড়েই গাঁজা, চোলাই মদ, হিরোইন, ইয়াবাসহ নানা মাদক দ্রব্য বিক্রয় এবং অসামাজিক কার্যকলাপও চলছে বলে জানা গেছে।

এব্যাপারে গাইবান্ধা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আবুল কাশেম সরকারের সাথে কথা বললে, তিনি জানান শুধু রেলওয়ে স্টেশন এবং প্লাট ফরম সংলগ্ন এলাকাই তার নিয়ন্ত্রনে। রেল লাইনের পাশের অবৈধ দখলের বিষয়টি তার দেখার দায়িত্ব রেলওয়ে ভূ-সম্পদ বিভাগের। এব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথারীতি লিখিতভাবে অবহিত করেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

গাইবান্ধা রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন রেলওয়ের ভূ-সম্পদ বিভাগের ৩নং কাচারী অফিসে গিয়ে অফিসটি বন্ধ পাওয়া যায়। পার্শ্ববর্তী লোকজন জানালেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত আমিন আব্দুল মোমিন বামনডাঙ্গা স্টেশনে দায়িত্ব পালনে গেছেন। তার সাথে মোবাইল (০১৭১৮-০৪৮৯৪৫) ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি অবৈধ দখলদারদের কাছে নিয়মিত মাসোহারা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এ সমস্ত অবৈধ দখলদারের বিষয়টি দেখার দায়িত্ব বাংলাদেশ রেলওয়ের পিডাব্লিউ ও আইডাব্লিউ বিভাগের। তবুও তিনি এসব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন বলে জানালেন।

Leave a Reply