গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র সংসদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির একটি ভুয়া ভিডিও সরাতে অস্বীকৃতি জানায় ফেসবুক। কিন্তু এ সপ্তাহে নিজেদের জালেই আটকে গেলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি।
কারণ, চলতি সপ্তাহে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গের একটি নকল ভিডিও বের হয়েছে। এখন দেখার পালা এবার তারা নিজেদের প্রধান নির্বাহীর ভিডিও সরায় কিনা।
প্রকাশিত নকল ভিডিওতে দেখা গেছে জাকারবার্গ বলছেন, একবার ভাবুন, কোটি কোটি মানুষের চুরি করা তথ্য, তাদের গোপন বিষয়, তাদের জীবন, তাদের ভবিষ্যৎ মাত্র একজন মানুষ নিয়ন্ত্রণ করছে।
জাকারবার্গের এই নকল ভিডিওটি ২০১৭ সালের ফুটেজ থেকে তৈরি করা হয়েছে। এটি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি যা ডিপফেক নামে পরিচিত।
ডিপফেক দিয়ে মূলত জাকারবার্গের মুখভঙ্গিকে নকল করে এমন সব বক্তব্যের সঙ্গে তার মুখভঙ্গি যুক্ত করা হয়েছে, যেসব বক্তব্য তিনি দেননি। অর্থাৎ জাকারবার্গ মুখ নাড়াবেন কিন্তু বক্তব্যটি দেবেন অন্যজন। এ ধরনের ভিডিওর মাধ্যমে মানুষ প্রতারিত হতে পারে কিংবা কারও সম্পর্কে ভুল ধারণা পেতে পারে।
জাকারবার্গের এই নকল ভিডিওটি ইসরায়েলি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান ক্যানি এআই তৈরি করেছে। ভিডিও তৈরির বিষয়টি মঙ্গলবার সিএনএনকে নিশ্চিত করেছেন স্টার্টআপটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ওমের বিন আমি।
জাকারবার্গের ভিডিওর পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জনপ্রিয় তারকা কিম কারদাশিয়ানের নকল ভিডিও তৈরি করা হয়। এসব ভিডিও জুনের ৬ থেকে ১১ তারিখ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের একটি অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয়। এ ধরনের ভিডিও তৈরির উদ্দেশ্য হলো- প্রযুক্তি ব্যবহার করে কিভাবে তথ্য বিকৃতি করা যায় তা দেখানো।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির একটি নকল ভিডিও সরাতে অস্বীকৃতি জানায় ফেসবুক। এতে পেলোসি ক্ষিপ্ত হন। তখন ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞেস করা হয়, পেলোসির জায়গায় যদি জাকারবার্গকে নিয়ে এমন ভিডিও তৈরি করা হতো তাহলে কি একই আচরণ করা হতো?
জবাবে ফেসবুকের পাবলিক পলিসি বিভাগের পরিচালক নেইল পটস বলেন, একই ভিডিওতে যদি পেলোসির জায়গায় জাকারবার্গকে সংযুক্ত করা হতো তাহলে ফেসবুক এমন সিদ্ধান্তই নিতো।
অবশ্য মার্কিন গণমাধ্যম সিনএনএন বলছে, জাকারবার্গের ভিডিওটির মতো পেলোসির ভিডিও তৈরিতে ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়নি। বরং পেলোসির ভিডিওটি প্রথাগত পদ্ধতিতে এডিটিংয়ের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।