Breaking News
Home / News / মাশরাফি, তামিমের দুই রকম আক্ষেপ

মাশরাফি, তামিমের দুই রকম আক্ষেপ

৩৮১ রান তাড়া করে ৩৩৩। ম্যাচ শেষে অতৃপ্তি—অস্ট্রেলিয়াকে যদি আরও কম রানে আটকানো যেত! ৩৪০-এর মধ্যে রাখা গেলেও তো শেষ দিকে লড়াইটা আরও বেশি আত্মবিশ্বাস নিয়ে লড়াই করা সম্ভব হতো।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের আগেও এই কথাই বলেছিলেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ৩৫০ রান তাড়া করে জেতা সম্ভব ট্রেন্টব্রিজে। এর বেশি হয়ে গেলে কঠিন। আজ ম্যাচ শেষে সেখানেই তাঁর হতাশা, ‘এখানে আমরা ৩৪০-৩৫০ রান পর্যন্ত তাড়া করতে পারব। আমাদের লক্ষ্যও সেটা ছিল। ওদের রান ৩৪০–এর বেশি যেন না হয়। ৪০-৫০ রান অতিরিক্ত করে ফেলেছে ওরা।’
সেটির অন্যতম কারণ ফিল্ডিং। ১০ রানে ডেভিড ওয়ার্নারের ক্যাচ ফেলেছেন সাব্বির রহমান। সেই ওয়ার্নার পরে করেছেন ১৬৬। বোলিংয়েও শেষ দিকে রুবেল হোসেন অনেক বেশি রান দিয়ে ফেলেছেন। বিশেষ করে ৩৫ ওভারের পর অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা যা করতে চেয়েছেন, তা–ই পেরেছেন। মাশরাফির চোখে ওই সময়ই ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট, ‘প্রায় ৪০ ওভার পর্যন্ত ওরা ওভারপ্রতি ৬ করে নিয়েছে। তার আগপর্যন্ত আমরা ম্যাচে ছিলাম। এরপর রানটা অনেক বেশি হয়ে গেছে। ওরা যে শটই খেলেছে, তাতেই রান পেয়েছে।’

তবে আশাবাদী হওয়ার মতোও অনেক কিছু ছিল ম্যাচটিতে। শেষ দিকে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং তো জয়েরই সম্ভাবনা দেখাচ্ছিল বাংলাদেশকে। মাহমুদউল্লাহ আউট না হয়ে গেলে নাটকীয় কিছু ঘটাও অস্বাভাবিক ছিল না। মুশফিকের সেঞ্চুরি, তামিম ইকবালের ফিফটিও বাকি ম্যাচগুলোর জন্য আত্মবিশ্বাস জোগাবে। সবচেয়ে বড় কথা, অস্ট্রেলিয়ার ওই বোলিং আক্রমণের সামনেও ৩৮১ তাড়া করে ৩৩৩ রান করে ফেলা।
মাশরাফির সংবাদ সম্মেলনের পর মিক্সড জোনে দাঁড়িয়ে তামিমও সেটাই বলছিলেন, ‘ইতিবাচক দিক হলো গত দুই ম্যাচেই আমরা পরে ব্যাট করে তিন শর বেশি রান করেছি। এতে একটা বিশ্বাস ব্যাটসম্যানদের মধ্যে আসবে যে আমরা যদি ৩২০-৩৩০ এর মধ্যে রাখতে পারি, তাহলে সুযোগ থাকে। আমরা জিনিসটা বিশ্বাস করা শুরু করেছি, এটা ভালো।’ বোলিংয়ে ৩-৪ ওভারের একটা সময় গেছে যখন বাংলাদেশ ভালো বোলিং করেনি। তামিমের কথা, ‘আসলে সবাই কিছু না কিছু ভুল করেছি বলেই পারিনি। পরের ম্যাচগুলোতে চেষ্টা থাকবে এটা যেন না হয়।’

নিজে ৬২ রান করে দুর্ভাগ্যজনকভাবে আউট হয়ে যাওয়ায় হতাশা আছে তামিমের। তবে বিশ্বকাপের শুরুর দিকের তুলনায় এখন তাঁর আত্মবিশ্বাসটা অনেক বেশি, ‘আমার হয়তো হিসাবমতো সব যাচ্ছে না। তবে এখন আত্মবিশ্বাস পাচ্ছি। শুরুতে মানসিকভাবে একটু খারাপ অবস্থায় ছিলাম। এই দুই ইনিংসে আত্মবিশ্বাস একটু হলেও ফিরেছে। ভাগ্য ভালো হলে ইনিংসগুলো বড় হতে পারত। আজ (গতকাল) যে শট খেলতে গিয়ে আউট হলাম, এই শট সাধারণত আমি ভালো খেলি।’ তামিমের বিশ্বাস, বড় ইনিংস খেলাটা এখন তাঁর জন্য সময়ের ব্যাপার। তবে সমস্যা হলো, তাঁদের হাতে সেই সময় বেশি নেই।

তামিমের আগে সাকিব আল হাসানও আউট হয়ে যান উইকেটে থিতু হয়ে। ভুল সময়ে হওয়া এই আউটগুলোকেই হারের কারণ মনে করছেন বাঁহাতি ওপেনার, ‘আমাদের এ রকম বড় রান তাড়া করার অভিজ্ঞতা বেশি নেই। আমি যেমন স্কোরবোর্ডের দিকেই তাকাচ্ছিলাম না। চেষ্টা করছিলাম, ৩০ ওভারের মধ্যে আমরা যেন ১৮০ থেকে ২০০ এর মধ্যে থাকতে পারি। তাহলে শেষ ২০ ওভারে সুযোগ নিতে পারব।’ সেটা হয়নি ভুল সময়ে হওয়া আউটগুলোর কারণেই। তামিমের আক্ষেপ, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমি ভুল সময়ে আউট হয়ে গেলাম। সাকিবও আউট হয়ে গেল। ভালো জুটি হচ্ছিল আমাদের। আমরা ভালো খেলেছি, তবে আরও ভালো হতো যদি ভুল সময়ে উইকেট না পড়ত।’
মাশরাফির আক্ষেপ অস্ট্রেলিয়াকে আরও আগে থামিয়ে দিতে না পারায়। তামিমের হতাশা, ভুল সময়ে আউট হওয়ায়। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের স্বপ্ন দোলাচলে পড়ে যাওয়াটাই বড় হতাশা এখন।
সেই আক্ষেপ-হতাশা থেকে বাকি ম্যাচগুলোতে কি জন্ম নেবে সাফল্যের কোনো গল্প?

About hasan mahmmud

Check Also

ইষ্ট ওয়েস্টর ছাত্র শান্তর অভিনব প্রতারণা, লুকিয়ে বিয়ে, শরীর ভোগ ও শিশু হত্যা

নিজস্ব প্রতিনিধি: ইষ্ট ওয়েস্টে ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র হাসিবুল হাসান শান্ত কলেজ ছাত্রীর …

Leave a Reply