আশরাফুল আলম || নিজস্ব প্রতিবেদক |||
কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলা কালিকা প্রসাদ ইউনিয়নের মো.নূরে আলম (২৮) বিয়ে করেছিল পার্শ্ববর্তী থানা কুলিয়াচরের মোঃ আরিজ গাজীর মেয়ে মানজু আক্তার(১৮)কে। বিবাহের পর তাদের দাম্পত্য জীবন সুখেই কাটছিল। কিন্তু বিবাহের আনুমানিক ৫ মাস পর তাদের দাম্পত্য জীবনে নেমে আসে এক কালোছায়া।
উক্ত ঘটনার বিষয়ে সরজমিনে গিয়ে জানতে চাইলে নূরে আলমের মা সাংবাদিকদের বলেন, নূরে আলম আমার ছেলে, মানজু আক্তার আমার ছেলের বউ, মানজু আমার ছেলের বউ হলেও তাকে আমি সব সময় নিজের মেয়ের মতোই দেখতাম। ঘটনার দিন সকাল বেলা আমি আমার মেয়েকে দেখতে ফরিদপুর তার শ্বশুড়বাড়ীতে সকালের দিকে আমার পুত্রবধূকে বাড়িতে রেখে বের হয়ে যাই। বিকালে বাড়ী ফিরে দেখি বাড়ীর তালা বন্ধ। পরে আশেপাশে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও বউমাকে না পেয়ে ছেলেকে জানাই। আমার ছেলে তার শ্বশুড়বাড়ীতে ফোন দিয়ে বউয়ের খবর জানতে চাইলে তারা কিছুই জানে না বলে জানান। পরবর্তীতে জামাই শ্বশুর সম্মিলিতভাবে সকল আত্বীয় স্বজনের বাসায় খোঁজ খবর নিয়ে কোথাও না পেয়ে বাড়ীতে ফিরে আসে।
বাড়ীতে ফিরে এসে নূরে আলম তার ঘর থেকে মানজু আক্তারের নিজ হাতের লেখার একটা সুইসাইড চিরকুট দেখতে পায়। সুইসাইড চিরকুট দেখতে পেয়ে নূরে আলম প্রথমে অবাক হলেও, পরে হতাশায় ভেঙ্গে পড়েন। এরপরে নূরে আলম খবর পান তার স্ত্রী ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গিয়েছেন! নূরে আলম কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এবং স্ত্রীর লিখে যাওয়া সুইসাইড চিরকুট পড়ে তিনি আরও বেশি মানসিকভাবে আহত হন। উক্ত ঘটনাটির সময় গত বছরের ৩০ জুলাই ২০১৯ইং সনের।
মানজু আক্তারের লেখা তার চিরকুটটি যাচাই করতে গেলে তার এক শিক্ষক চিরকুটের হাতের লেখা দেখে নিশ্চিত করেন এটি মৃত মানজু আক্তারেরই হাতের লেখা।
পরবর্তীতে লোকের মুখে শুনতে পাওয়া যায় পৌর শহরের ভৈরব লক্ষীপুর এলাকায় ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে মানজু আক্তার আত্মহত্যা করেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন লোকের মুখে জানা যায়, মেয়েটা ট্রেন আসার আগেই সেখানে বসা ছিল। কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দ্যেশে ছেড়ে আসা চলন্ত কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে আনুমানিক বিকাল ৫ টায় মেয়েটি লাফিয়ে পড়া মাত্রই ট্রেনে কাঁটা পরে মারা যায়। এই ঘটনা দেখে রেললাইনের পাশে থাকা স্থানীয় একজন ৯৯৯ কল দিয়ে ভৈরব থানাকে অবহিত করলে, ভৈরব রেলওয়ে থানা পুলিশ এসে আনুমানিক সন্ধ্যা পনে ৭টায় কয়েক টুকরায় বিভক্ত অজ্ঞাতনামা লাশটিকে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় স্বামী নূরে আলমের বোন সাংবাদিকদের বলেন, আমার বাবা নাই, আমার ভাই আমার স্বামীর দোকানে চাকরী করতো, আমার ভাই অনেক ভাল মানুষ, কিন্ত আজ আমার ভাই মিথ্যে মামলায় দীর্ঘ ৭ মাস যাবৎ জেলখানায় কারাবন্দী হয়ে আছে। দেশ ও দশের নিকট এবং প্রশাসনের প্রতি আমার আকুল আবেদন ও বিশেষ অনুরোধ রইলো যেন এই ঘটনার সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে আমার নির্দোষ ভাইকে যেন এই মিথ্যে মামলা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।






Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.